পড়াশুনার অর্থ কি নিজের ইচ্ছাকে বিসর্জন দেওয়া ?

স্কুল-কলেজের শিক্ষা অনেকাংশে ব্যর্থ নয় , অনেক স্থলে মারাত্মক । ফেইসবুক পেইজ

একটা তিন ঘণ্টার জুয়া খেলা একটা করে জীবন কেড়ে নেয় ! 
যে শিক্ষাব্যবস্থায় শেখার থেকে এ+ এর গুরুত্ব বেশি সেখানে শিক্ষা কিভাবে থাকে ? ! 
মাননীয় মন্ত্রি,মাননীয় সমাজ,মাননীয় এ+ আপনারা বুঝবেন না একজন মায়ের ছেলে হারানোর বেদনা । আপনারা শুধু বুঝবেন তিন ঘণ্টার জুয়া খেলা । তাই এ জুয়া খেলায় হেরে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী না ফেরার দেশে , এ+ বিহীন দেশে চলে যেতে দ্বিধাবোধ করেনা । কারন আপনারাই তাদেরকে শিখিয়েছেন এ+ পাওনি বাবা,পৃথিবীর কাছে তুমি অপ্রয়োজনীয় । 
আর আমরাও বইয়ের বোঝা টানতে টানতে নিয়ম ভাঙতে ভুলে গেছি ।
প্রমথ চৌধুরীর 'সাহিত্যে খেলা' প্রবন্ধটিও মনে সাহস জোগায়। তিনি সাহিত্যকে খেলার সঙ্গে তুলনা করেছেন। খেলার মাঠে বর্ণবৈষম্য নেই, ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, নমঃশূদ্র, চাড়াল সবাই খেলতে পারে। সবাই সমান পারদর্শীও নয়। সাহিত্যের আসরেও থাকতে পারে ছোট-বড়, খ্যাত-অখ্যাত, কুখ্যাত-উপেক্ষিত লেখক।
কিন্তু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এত বেশি বর্ণবৈষম্য যে ছোট ছোট বাচ্চারাও এর হাত থেকে রেহাই পায়না , আর এতটাই ঘৃণিত যে যিনি শেখার জন্য স্কুল-কলেজে যায় তাকেই সবার আগে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয় । 
তাই সাহিত্য আর শিক্ষার মধ্যে বিরাট তফাত বিদ্যমান, শিক্ষকের বেত্রাঘাত কখনো সাহিত্য হতে পারেনা ।
আমাদের দেশের শিক্ষার উদ্দেশ্য শুধু শেখানো , তবে তা বাস্তবিক নয় কাল্পনিক ধারনা । সেখানে শিক্ষার্থীরা প্রাধান্য পায়না , প্রাধান্য পায় শিক্ষকেরা । 
আর সাহিত্যের উদ্দেশ্য শেখানো নয় বরং আনন্দ দেওয়া , যার মাঝে হাজারো শিক্ষণীয় বস্তু লুকায়িত থাকে । 
বস্তাপচা শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন চাই 
পড়াশুনার অর্থ কি নিজের ইচ্ছা কে বিসর্জন দেওয়া !
আসুন নিজের ইচ্ছা কে বিসর্জন দেওয়ার শিক্ষাব্যবস্থা বদলাতে একত্রিত হই সবাই ।

আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার কিছুটা উন্নয়ন হলেও 
শিক্ষার যে মূল উদ্দেশ্য সেদিকে তা ধাবিত হচ্ছে না । 
এটা আমরা যেমন বুঝি তেমনি জানেন সমাজের গণ্য-মান্য ব্যক্তিরাও 
আমরা এটা নিয়ে অনেক কিছু চিন্তা-ভাবনা করলেও তারা এটা নিয়ে কিছুই বলেনা , 
তারা যদি বলে শিক্ষার কাজ চাকুরী জোগাড় / অর্থ উপার্জনে সহায়তা করা নয় 
তাহলে আমাদের সমাজের মানুষ তাদের বাহবা দিয়ে মঞ্চে দাঁড়া করাবে না 
কারন - [ " আর্থিক কারনে অর্থকরী নয় এমন সবকিছুই এদেশে অনর্থক বলে বিবেচিত হয় " 
                ------------------------------------------------------- প্রমথ চৌধুরী ] 
তারপরও আমার বিশ্বাস এমন কিছু মানুষ আছে যারা জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার জন্য জন্মায়নি বরং সোনার বাংলা গড়ার জন্য জন্মেছে । 
সে বিশ্বাসেই আমি বলি - " একদিন এদেশের বাচ্চারা চোখের জলে নয় , মুখের হাসিতে বই তুলে নিবে "
আর কেউ বলতে পারবেনা - "তুমি একটা গাধা ছাত্র ,এ পৃথিবীতে তোমার কোন প্রয়োজন নেই "
            । নিজের ইচ্ছাকে বিসর্জন দেওয়ার শিক্ষাব্যবস্থা বদলাতে আওয়াজ তুলুন আপনিও । 
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যা 

ছোটবেলা থেকেই একজন শিক্ষার্থীকে শেখানো হয় কিভাবে ক্লাসে প্রথম হতে হয় , 
তাকে শেখানো হয়না কিভাবে সবাই মিলে একটি কাজ করতে হয় । 
ছোটবেলা থেকেই তাকে পড়ানো হয় - "পড়াশুনা করে যে গাড়ি-ঘোরায় চড়ে সে " , 
এটা তাকে শেখানে হয়না পড়াশুনা করে যে ভালো মানুষ হয় সে । শেখানো হলেও তা ভুল হতো কারণ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটাই তৈরিই হয়েছে কিভাবে অর্থ উপার্জন করা যায় তার সমাধানস্বরূপ , প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য নয় । 
অথচ শিক্ষা আবিষ্কারের উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মনের উন্নতি, মানুষের আত্মাকে আলোকিত করার জন্য । 
যারা এটাকে উল্টো করে বানিয়েছে অর্থের উন্নতি তাদেরকে এদেশের জনগন বাহবা দিবে এটাই স্বাভাবিক । 
কারণ - "আর্থিক কারণে অর্থকরী নয় এমন সবকিছুই এদেশে অনর্থক বলে বিবেচিত হয় ।"